বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
আহমেদ সাজু, সখীপুর কালের খবর :
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কীর্তনখোলা বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে, কীর্তনখোলা বাজারের পশ্চিম পাশের রাস্তা সংলগ্ন এলাকার লাল মাহমুদের পরিবারকে একঘরে করার অভিযোগ ওঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার( ২৩ মার্চ) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিজোড়া জামে মসজিদের ইমাম লাল মাহমুদের নাতি সালমানের সাথে
সমবয়সী একই গ্রামের ফল ব্যবসায়ী হেকমতের ছেলে মুরাদের সাথে কথাকাটির একপর্যায়ে দুজনেই ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে।রোজার আগের দিন তারাবি নামাজে মসজিদে যাওয়ার সময় রাস্তায় তাদের মারামারি হলে বিষয়টি আপোষ করার জন্য কীর্তনখোলা চৌরাস্তা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সালমানকে ডেকে আনেন।কিন্তু সালমানের পরিবারের অভিযোগ তাকে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়।এ ঘটনায় সালমানের চাচা শরীফুল ইসলাম ও সাজেদুল সাথে বাজার বণিকের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদের সাথে কথা কাটি হলে সভাপতি তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের ঐ ইমাম সাহেবের পরিবারের কাছে কোন পণ্য বিক্রি না করার জন্য বাজার ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেন।বাজার বণিক সমিতির নির্দেশ মতে,ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে সবধরনের পণ্য বিক্রি বন্ধ রেখেছে।
সোমবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে কীর্তনখোলা বাজারের ব্যবসায়ী সবুজ ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী লোকমান হোসেনের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের প্রতিনিধি সাথে কথা হলে, তিনি জানান বাজার কমিটি নির্দেশনা অনুসারে ইমাম সাহেবের পরিবারের কাছে ঔষধ বিক্রি বন্ধ রেখেছি।ঐ বাজারের মুদি দোকানি রুবি স্টোরের মীর রুপক জানান, বাজারে ব্যবসা পরিচালনা করতে গেলে অবশ্যই কমিটির কথা মানতে হবে।বাজারের পশ্চিম পাশের চা দোকানকার তাইবুর বলেন,কমিটির কথামতো আপাতত ইমামের পরিবারের কাছে কোন কিছু বিক্রি করছি না।রোজার দিনে এমন ঘটনা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির নজরে এলে,মানবিক দিক বিবেচনা করে ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ার হোসেন গত( ২৮মার্চ) তারিখে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি লক্ষ্যে শালিশী বৈঠকের আয়োজন করলে ভুক্তভোগী ইমাম সাহেবের পরিবার উপস্থিত হলেও অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান উপস্থিত না হওয়ায় কোন সুরাহা করা সম্ভব হয়নি।তিনি বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক,তাই দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
এবিষয়ে বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকজন ঘটনা শুনার পর সমাধানের চেষ্টা করা হলে ঐ ছেলের চাচা শরীফুল ও সাজেদুল আমাকে মারধর করে।এ বিষয়ে সখীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।ঘটনার সত্যতা জানতে প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে সাদেকুল ইসলাম জানান, আমরা মৌখিকভাবে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দিয়েছি বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইমামের পরিবারের কাছে সকল প্রকার পণ্য বিক্রি না করতে।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, পরিবারটি অনেক ভালো, নিয়মিত আমাদের দোকান থেকে মালামাল কিনে।অনেক সময় অগ্রীম টাকা দোকানে দিয়ে মাল নিয়ে শোধ দেয়।আমরাও চাই বিষয়টি দ্রুত সমাধান হোক।
ভুক্তভোগী পরিবারের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা স্বপরিবারে তাদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি। আমাদের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় বসবাস করছি।
রমজান মাসে আমাদের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত করে ফেলেছে অভিযুক্তরা।তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে আমি বিষয়টি লিখিত আকারে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। আমার মা দীর্ঘদিন যাবৎ দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত আমরা এখন কি করি?